গ্লোবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড (গ্যাটকো) দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ ১৫ জনের মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ৮ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
রোববার ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আলী হোসেনের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।
এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এরপর আসামি পক্ষ অভিযোগ গঠন শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৮ অক্টোবর নতুন দিন ধার্য করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় আংশিক অভিযোগ গঠন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৫ জুন ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগারে অবস্থিত তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের (অস্থায়ী) বিচারক আলী হোসাইনের আদালতে মামলায় খালেদা জিয়ার অব্যাহতির আবেদন বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় এদিন শুনানি পেছানোর আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। তবে আদালত এদিনই অভিযোগ শুনানি করতে বলেন। এরপর আংশিক অভিযোগ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী শুনানির জন্য আদালত আগামী ১০ জুলাই দিন ধার্য করেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী হান্নান ভুইঁয়া এসব তথ্য জানান।
উল্লেখ্য, মামলাটিতে ১৫ জন আসামির মধ্যে ১৪ জনের অব্যাহতির বিষয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার অব্যাহতি চেয়ে শুনানি শুরু হয়।
জানা যায়, ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী চারদলীয় জোট সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন।
মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেফতার করা হয়। ঐ বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপো (আইসিডি) ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।
এর ভেতর মামলার ২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, এম কে আনোয়ার, এম শামছুল ইসলাম, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দরের তৎকালীন প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় তাকেও মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মামলার চার্জশিটভুক্ত মোট ২৪ আসামির মধ্যে ৯ জন এরইমধ্যে মারা গেছেন। বর্তমানে খালেদা জিয়া ব্যতিত অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল (অব.) আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন ও এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্যাটকো পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সৈয়দ তানভির আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শাহাদত হোসেন, বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহন) এ এম সানোয়ার হোসেন এবং বন্দরের সাবেক সদস্য লুৎফুল কবীর।