আমার এক চোখ নিয়ে ১৮ কোটি মানুষের চোখ খুলে দিয়েছে: আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী

 

কোটাসংস্কার আন্দোলনে এক চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন তানভীর হাসান তুষার


কোটাসংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হওয়া সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন ও গুরুতর আহত হয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। নির্মম মৃত্যুসহ রয়েছে অসংখ্য শিক্ষর্থীর দৃষ্টি হারানোর মতো হৃদয় বিদারক ঘটনা। এ আন্দোলনে পুলিশের ছররা বুলেটে এক চোখ হারিয়েছেন ঢাকা কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর হাসান তুষার। 


গত ১৮ জুলাই রাজধানীর বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের নির্মম হামলার শিকার হন এই সাধারণ ছাত্র। কিছু বুঝে উঠার আগেই পুলিশের অতর্কিত গুলি ভেদ করে বাম চোখের কর্নিয়া। তার মুখে ও বুকে ছররা বুলেট লাগে মোট ১০টি। তাকে বাঁচাতে আহত অবস্থায় তড়িঘড়ি করে হাসপাতালের উদ্দেশে ছুটে চলে বন্ধুরা। পরপর ৫টি হাসপাতাল ঘুরেও মেলেনি এতো গুরুতর আহত রোগীর চিকিৎসা। পরে রাজধানীর চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয় তাকে।    


চিকিৎসকরা জানান, তুষারের এক চোখের কর্নিয়া-রেটিনা নষ্ট হয়ে গেছে। জটিল অপারেশন। বুলেট এখনও ভেতরে রয়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।    


এখনও হয়নি অপারেশন। তবে এতেও যেন আক্ষেপ নেই এই শিক্ষার্থীর। দেশ স্বাধীনের স্বাদ গ্রহণে মত্য তুষার। সরকার পতনের পর গত (৫ আগস্ট) তার ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন অর্জনের বিজয়গাঁথা। 


তুষার লেখেন, 'জুলাইয়ের ১৮ তারিখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমার এক চোখ নিয়ে ১৮ কোটি মানুষের চোখ খুলে দিয়েছে। এই আন্দোলনে নিজের এই সামান্য অবদানটুকু রাখতে পেরে আমি আজ গর্বিত। আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন সবাই আমাকে নিয়ে গর্বিত।, 



তিনি আরও লেখেন, 'আলহামদুলিল্লাহ আজ থেকে এক নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হলো।'


এখনেই থেমে নেই অদম্য এই তরুণ। অসুস্থ শরীর নিয়ে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে করে যাচ্ছেন তরুণদের নিয়ে কাজ। সরকার পতন পরবর্তী সময়ে দেশের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সংঘর্ষ ও সংখ্যা লঘুদের উপর হামলা রুখতে সাংগঠনিক কাজ করে যাচ্ছেন। স্থানীয় তরুণদের সংঘর্ষ এড়িয়ে চলতে উদ্বুদ্ধ করছেন বিভিন্নভাবে।