গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর সেদিন বিকালেই রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ভবনটিতে আবার আগুন দেয়া হয়। সেই সঙ্গে ভবনের ভেতরে থাকা সব মালপত্র লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে একদল লোক।
সোমবার জনরোষে দেয়া আগুনে ভবনের অধিকাংশ পুড়ে গেলেও বাকি থাকা মালপত্র নিতে লম্বা লাইন লেগে যায় রিকশা, ভ্যানের।
এভাবে মালপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য নানা কারণের কথা বলছেন লোকেরা। কেউ বলছেন, আওয়ামী লীগের লোকদের অত্যাচারে এলাকায় থাকতে পারেননি। কেউ বলছেন, অন্য দল করায় একাধিক মামলা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। কেউ বলছেন, অন্যদের দেখে তিনিও একই কাজ করছেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুর পৌনে দুইটার দিকে সরেজমিনে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে। এ সময় মালামাল নিতে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ভাঙতে দেখা গেছে ভবনের বিভিন্ন অংশ।
কার্যালয়ের প্রতিটি তলা থেকে মালপত্র খুলে নেয়ার দৃশ্য শত শত মানুষ মোবাইলে ধারণ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। শুধু কেন্দ্রীয় কার্যালয়ই নয়, আশপাশে থাকা দলটির অন্যান্য সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের অফিসেও একই চিত্র দেখা যায়। এ সময় কিছু কিছু জায়গায় আগুন জ্বলতেও দেখা যায়।
সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বিকেলে গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন লাগানো হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় গতকাল মঙ্গলবার আবার আগুন দেয়া হয়।
এদিন দেখা যায়, লোকজন রিকশা, ভ্যান নিয়ে এসে সামনে যা পাচ্ছেন সবই নিয়ে যাচ্ছেন। ভবনের বিভিন্ন অংশে থাকা গ্লাসগুলো খুলে ফেলা হয়েছে। যেগুলো খোলা সম্ভব হয়নি সেগুলো ভাঙা হচ্ছে হাতুড়ি দিয়ে। পরে হাতুড়ি দিয়ে খোলা হচ্ছে লোহা, স্টেইনলেস স্টিল। সেগুলো এনে জমা করা হচ্ছে নিচে। পরে রিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বাড়ি। এ সময় বিভিন্ন কক্ষে থাকা স্টিলের আলমারিসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায় তারা।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি ৮ কাঠা জমির ওপর নির্মিত। পুরোনো ভবন ভেঙে সেখানে ১০ তলা বিশিষ্ট নতুন এই ভবন ২০১৮ সালের ২৩ জুন উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।